শৈলকূপায় গৃহবধূ “আফরোজা” হত্যা ‘না আত্মহত্যা রহস্যর সন্দেহ দিন দিন ঘনীভূত।
ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ শাহিদুর রহমান (সন্টু)
গত সেপ্টেম্বর মাসের ১৮ তারিখ রোজ শনিবার রাত আনুমানিক ১২ টার দিকে শৈলকূপা উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের সাধুখালি গ্রামে স্বামী শামীম হোসেনের বাড়ীতে আফরোজা খাতুন(২২) নামের এক গৃহবধূ রহস্য জনক ভাবে মারা যায়। স্বামীর বাড়ির সকলে দাবী করে যে স্বামীর সাথে রাগারাগি করে বিষ পানে আত্মহত্যা করেছে আফরোজা। তবে আফরোজার পিতা মাতার অভিযোগ তার স্বামী শামীম সহ তার বাবা হাবিবুর রহমান, মাতা শিউলি খাতুন ও শিউলি খাতুনের দুই ভাই বাবু ও মিলন মিলে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে মুখে বিষ ঢেলে দেয়। পরে আত্মহত্যার নাটক
সাজায়।
কন্যা হারনো পিতা টুলু ইসলাম আকুতি করে জানায় যে গত ১৫/০৭/২০১৯ তারিখে আমার মেয়ে আফরোজা খাতুনের বিবাহ হয় শৈলকূপা উপজেলার সাধুখালি গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে শামীম হোসেন(২১) সাথে। বিবাহের পরে কয়েক মাস সুখে শান্তিতে তাদের জীবন অতিবাহিত হলেও ৬ মাস পর বিভিন্ন অজুহাতে টাকা চাইতে থাকে। আমি ও মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে সাধ্য মত টাকা দিতে থাকি। চাষা বাস সহ পানের বরজ তৈরি করতে প্রায় ২ লক্ষ টাকা দিই। কিন্ত তাদের চাহিদা অনেক। এরইমধ্যে ঐ ছেলের সাথে একটি মেয়ের পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে উঠে। যার কারনে একদিকে টাকার চাহিদা অপর দিকে পরকীয়া দুই মিলে শুরু হয় সংসারে চরম অশান্তি। এক পর্যায়ে মেয়ে আমার বাড়ীতে বেড়াতে এসে আর স্বামীর বাড়ীতে যেতে চায় না। তখন ছেলের বাবা মা এসে প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিয়ে যায় এবং তারা কথা দেয় যে আর কোন সমস্যা হবে না। তবে ফিরে যাওয়ার পর ও থেমে থাকেনি আফরোজার উপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন। ঘটনার দুই দিন আগে ১৭ই সেপ্টেম্বর আমার মেয়ে ফোন করে বলে যে আব্বু আমাকে নিয়ে যাও। পরের দিন আমার বড় ভাই আফজাল
কে পাঠাই আফরোজা কে নিয়ে আসতে। কিন্ত তারা আমার বড় ভাই কে গালাগালি করে মেয়ে না দিয়ে ফেরত পাঠিয়ে দেয়। বড় ভাই ফেরত আসলে পরের দিন শনিবারের রাত আনুমানিক দুই টার সময় মোবাইলে খবর আসে যে আমার মেয়ে আফরোজা বিষ পানে আত্মহত্যা করেছে। খবর পেয়ে আমরা খুব ভোরে আফরোজার বাড়ীতে যায়। যায়ে দেখি খাটের উপর পড়ে আছে আফরোজার মৃত দেহ আর বাড়ির সবাই সমস্ত জিনিস পত্র নিয়ে পালিয়ে গেছে। আফরোজার এক কান দিয়ে রক্ত পড়ছে, চোয়ালে আঘতের কাল দাগ, পিঠে আঘাতের দাগ রয়েছে।
আফরোজার মামী অজলা খাতুন জানায়, মৃত আফরোজার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের দাগ ছিল। কানের লতি ভাঙ্গা চোয়ালে কাল দাগ ও পিঠে কাল দাগ ছিল। মুখ দিয়ে সাদা ফেনা বাহির হচ্ছিল। আঘাতের নমুনা দেখে বোঝা যায় যে তাকে হত্যার পর তার মুখে বিষ ঢেলে দেওয়া হয়েছে।
এই বিষয়ে জানতে শামীম হোসেনের বাড়ীতে গেলে তাকে না পাওয়া গেলেও পাওয়া যায় তার মা শিউলি খাতুন ও পিতা হাবিবুর রহমান কে। তাদের সাথে ঘটনার কথা জানতে চাইলে তারা বলে যে অন্য দিনের মত আমার ছেলে ও পুত্র বধূ ঘরে শুয়ে পড়ে। তবে আনুমানিক রাত ১১ টার দিকে ওদের ঘর থেকে চেচামেচির শব্দ শুনতে পেলে আমরা উঠে যায়। শামীম কে ডাকি যে কি হয়েছে শামীম তখন বলে যে মা তোমার বউ মা বিষ খেয়েছে। তখন সাথে সাথে ইজি বাইকে করে প্রথমে আমাদের গ্রামের এক ডাক্তারের নিকট নিয়ে গেলে তার কাছে ওয়াশ করা যন্ত্র না থাকায় রাম চন্দ্র পুর গ্রামের এক চিকিৎসকের নিকট নিয়ে যায়। সে চিকিৎসক রোগী না দেখলে পরে আলমডাঙ্গা বাজারে জিয়ারত ডাক্তারে নিকট নিয়ে গেলে যে দেখে বলে যে রুগী অনেক আগেই মারা গেছে, তাকে আপনারা ঝিনাইদহ হাসপাতালে নিয়ে যান। তখন আমরা ঝিনাইদহ না নিয়ে বাড়ীতে ফিরিয়ে নিয়ে আসি।
ঘটনাকৃত বাড়ির সাথে লাগোয়া দক্ষিণের পাশের বাড়ির মানুষ কাছে জানতে চাইলে তারা জানায় যে ঐ বউ বিষ খেয়ে মরা গেছে। তবে রাতের ঘটনা আমরা কিছুই জানি না । সকাল বেলা কান্না শুনে জানতে পারি যে হাবিবুরের বেটার বউ বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে। গ্রামের এক ব্যক্তি নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানায় যে মুলত আগেই মরে গেছে পরে ঘটনা কে ধামা চাপা দেওয়ার জন্য মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে গ্রাম্য ডাক্তারের নিকট নিয়ে গেছে। যার কারনে কোন গ্রাম্য ডাক্তার রুগীর গায়ে হাত দিয়ে দেখেনি।
ভুয়া জন্ম নিবন্ধন দেখিয়ে আফরোজার সাথে কাবিন রেজিস্ট্রিঃ করেছিল শামীম হোসেন। গত ১৫/০৭/২০১৯ তারিখে ঝিনাইদহ জেলার হরিনাকুন্ডূ উপজেলার
রঘুনাথ পুর ইউনিয়নের পোড়াহাটি গ্রামের টুলূ ইসলামের মেয়ে আফরোজার সাথে শ্রীপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে শামীম হোসেনের যে বিবাহ হয় ঐ বিবাহের কাবিন নামায় যে ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে সে ঠিকানায় তারা অনেক আগে বসবাস করত। তারা বর্তমানে বসবাস করে শৈলকূপা উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের সাধুখালী গ্রামে। কাবিন নামায় শামীম হোসেনের জন্ম তারিখ লেখা হয়েছে ২৫/০১/১৯৯৯ সাল। কিন্ত কন্যার জন্ম তারিখ ১৭/১১/১৯৯৮ সাল। সেই মোতাবেক কন্যা শামীমের ২ মাস ১২ দিনের বড়।
শামীমের মা শিউলি খাতুন জানায় যে শামীমের জন্ম ২০০১ সালে সেই তুলনায় শামীম বউয়ের থেকে প্রায় ৩ বছরের ছোট্ট। ছোট্ট ছেলের সাথে বয়সে বড় মেয়ের কি জন্য বিবাহ দিলেন এই প্রশ্ন করলে শামীমের মা সঠিক উত্তর দিতে পারেনি। সে বলে যে আমার ছেলে টি দেখতে সুন্দর তাই মেয়ে পক্ষ খুব ধরাধরি করে, তাছাড়া আমাদের একটু অর্থনৈতিক সমস্যা ছিল। যাই হোক কোন ভাবে বিয়েটি হয়ে গিয়েছে এই আর কি? ছেলের বাবা উপস্থিত থাকলেও সে তেমন কোন কথা বলে নি। তার নিকট জানতে চাওয়া হয় যে ভোটার তালিকায় শামীমের নাম আছে কি না ? তখন সে জানায় বয়স কম বলে ভোটার তালিকায় শামীমের নাম নেই। আপনাদের প্রকৃত বাড়ি হারিনাকুন্ডূ উপজলার তাহের হুদা ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামে। তখন সে জানায় এই টা তার বাপের বাড়ী।
এই খানে বসবাসের আগে তারা আরও দুই জায়গায় বসবাস করত। শৈলকূপার মিজাপুর ইউনিয়নে বর্তমানে বসবাস করলেও শামীমের জন্ম নিবন্ধন ছিল
হরিনাকুন্ডূ উপজলার তাহের হুদা ইউনিয়ন পরিষদের। তার জন্ম নিবন্ধন তাহের হুদা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কেন নেওয়া হয়েছে, এই তথ্যের অনুসন্ধান করতে
গেলে বেরিয়ে আসে আরও এক নতুন তথ্য। সেটা হল তাহের হুদা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনজুরুল আলম জানালেন যে নিবন্ধন সনদের স্বাক্ষর তার না এবং
যে সচিবের স্বাক্ষর দেওয়া আছে তাও জাল। এই নিবন্ধন সনদ ভুয়া। ইউনিয়ন নিবন্ধন রেজিস্ট্রেশন খাতায় ঐ তারিখে এই নম্বরের কোন সনদ বিতরন করা হয়নি। আর ভুয়া নিবন্ধন সনদ দেখিয়ে কেন কি উদ্দেশ্যে কাবিন রেজিস্ট্রি করেছে তাহা আইন শৃঙ্খলা বাহিনি তদন্ত করলেই প্রকৃত কারন বেরিয়ে আসবে।
মুলত টাকার লোভেই আফরোজার সাথে বিবাহ দিয়েছিল শামীমের পরিবার। যার কারনে আফরোজা তেমন সুন্দরী না এবং বয়সে শামীমের থেকে প্রায় ৩ বছরের বড় হলেও তেমন কিছুই মনে হয়নি শামীমের পরিবারের। আফরোজার সাথে বিবাহের পর শামীমের পরিবার বিভিন্ন সময়ে আফরোজার পিতার কাছে টাকা চাইতো। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে আফরোজার পিতা টূলু ইসলাম পনের কাঠা জমিতে পানের বরজ করে দিয়েছে। ইজিবাইক কিনে দিয়েছে। তারপরেও ঘটনার এক মাস আগে আবার টাকা দাবী করে শামীম । শুধু টাকা দাবীই করে না তার স্ত্রী কে মারধর করে। যার প্রেক্ষিতে আফরোজাকে তার বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। পরে এসে সালিশের মাধ্যমে তাকে আর অত্যাচার করবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে শামীমের বাবা মা এসে আফরোজাকে নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় সে বলেছিল মা তোমরা আর কোন টাকা দেবে না। আমি দেখতে ভাল না তাই ও এখন অন্য মেয়েকে ভালবাসে। যতই টাকা দেও আমি ওর সাথে সংসার করতে পারব না উপরের কথা গুলি সাংবাদিকদের জানায় আফরোজার মা মমতাজ।
ঘটনার দিন রাত ৯ টার দিকে ঘরে শুতে যায় আফরোজা ও শামীম । ঘরে যাওয়ার পরেই শুরু হয় কথা কাটাকটি। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে শামীম তাকে কোন কিছু দিয়ে আঘাত করলে লাগে আফজার চোয়ালে। তারপর সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। শামিম ডাক দেয় বাবা মাকে। তারা এসে যখন দেখে অবস্থা বেগতিক তখন আফরোজার মুখে বিষ ঢেলে দেয়।
এই অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায় তারা রাত্রে যে ৩ গ্রাম্য চিকিৎসকের নিকট গিয়েছিল তাদের সাথে কথা বলে। প্রথমে গ্রামের যে চিকিৎসকের নিকট নিয়েছিল সে বলে যে রুগীর অবস্থা প্রচণ্ড বেগতিক দেখে আমি তাদের অন্য জায়গায় নিয়ে যেতে বলি। নিজ গ্রামের গ্রাম্য চিকিৎসক যখন রুগী কে দেখে না তখন তাকে নিয়ে যায় রামচন্দ্রপুর গ্রামের গৌতম নামে এক পল্লী চিকিৎসকের নিকট। গৌতম জানায় এই রুগীকে দেখে আমার বিষ খাওয়া মনে হয় নি। তাছাড়া মনে হয়েছিল সে মারা গেছে। তাই আমি তাকে ঝিনাইদহ অথবা কুষ্টিয়া নিয়ে যাওয়ার কথা বলি। গৌতম তখন কোন চিকিৎসা দেয় না তখন তারা তাকে নিয়ে যায় আলম ডাঙ্গা বাজারের জিয়ারত চিকিৎসকের বাড়ীতে, তখন বাজে রাত প্রায় ১২ টা। পল্লী চিকিৎসক জিয়ারত তাকে দেখে গায়ে হাত দিয়ে বুঝতে পারে সে আগেই মারা গিয়াছে। তখন সে বলে যে আপনারা তাকে ঝিনাইদহ হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে তারা পরে কি করেছে তা আমি জানি না।
তবে জিয়ারত চিকিৎসকের ছেলে লিটন হোসেন জানায় যে ঐ রোগী দেখে বিষ খাওয়া রুগী মনে হয়নি, আব্বার কাছে যখন ঐ রুগী নিয়ে এসেছিল তখন
আমি ও সেখানে ছিলাম।
ঐ রাতে আফোজার মৃত দেহ নিয়ে ৩ জন পল্লী চিকিৎসকের নিকট গেলে তারা রুগীকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে যেতে বললে তারা তা না নিয়ে বাড়ীতে ফিরিয়ে নিয়ে এসে সকলে পালিয়ে যায়। তবে সেই রাত্রে মেয়ের বাবা কে জানায় যে আপনার মেয়ে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে। রাতের এই ঘটনা বাড়ির আসে পাশের মানুষ কেউ জানতে পারে না। বাড়ির পাশের প্রতিবেশীরা জানতে পারে যখন আফরোজার বাপের বাড়ির মানুষ এসে কান্না কাটি শুরু করে। টূল ইসলাম জানায়, যে আমরা কানের লতি ভাঙ্গা এবং কান দিয়ে রক্ত বাহির হচ্ছে সেই সাথে চোয়ালে আঘাতের দাগ দেখেই বুঝতে পারি তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। পরে পুলিশ এসে আফরোজার লাশ ময়না তদন্তের জন্য ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এই মর্মে শৈলকূপা থানায় মামলা করতে গেলে শৈলকূপা থানা বলে যে এখন হত্যা মামলা হবে না। তাই বলে একটি কাগজে আমার স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। পরে জানতে পারলাম যে থানায় একটি আত্মহত্যা মামলা হয়েছে। ময়না তদন্ত করে আফরোজার মৃত দেহ বাড়ীতে ফিরিয়ে নিতে কন্যা হারানো শোকার্ত পিতা টূলু ইসলামের খরচ হয় ১২ হাজার টাকা।
আফরোজার পরিবারের অভিযোগ পুলিশ ও ডাক্তার মিলে সুরাত হাল রিপোর্ট পরিবর্তন করেছে। এই মর্মে আফরোজার মামী যে লাশের সুরাত হাল রিপোর্ট করার সময় পুলিশের নির্দেশ মত মৃতদেহ উল্টিয়ে পালটিয়ে দেখিয়ে ছিল সেই অজলা বেগম জানায় যে পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছিল যে, কোন কিছু দিয়ে ডান কানে আঘাত করা হয়েছে সেই আঘাতেই কানের শিরা ফেটে যায় এবং কানের লতি ভেঙ্গে প্রচুর রক্ত বাহির হয়। তাছাড়া কানের সামান্য নিচে মুখে আঘাতের কাল দাগ ছিল। পিঠে মারার কাল দাগ ছিল। পা বেকা কুজো হয়ে গিয়েছিল। যা দেখে মনে হবে না যে সে বিষ খেয়ে মারা গেছে।
আফরোজার দেহের পুলিশের সুরাত হাল রিপোর্টে লেখা হয়েছে যে, মাথা কপাল মুখমণ্ডল স্বাভাবিক। ঠোট,গলা পাউ হইতে হাতের মাসুম স্বাভাবিক। বুক পেট
স্বাভাবিক। পিঠের বাম পাশের পাজড়ে সামান্য খোচার মত দাগ দেখা যায়। কোমর হইতে পা পর্যন্ত স্বাভাবিক। প্রস্রবের রাস্তা স্বাভাবিক এবং পায়খানার রাস্তায় সামান্য মল দেখা যায়। শরীরের কোথায় কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায় নি। বি.দ্রঃ মুখ দিয়ে বুদ বুদ বাহির হচ্ছে। তার ডান কান দিয়ে রক্ত দেখা যায়, বাম চোখের পাতার উপর সামান্য কালচে অনুভব হয়, মুখ দিয়ে গন্ধ বাহির হয়।
পুলিশের দেওয়া সুরাত হাল রিপোর্ট দেখার পর প্রচণ্ড হতাশ হয়ে পড়ে মৃত আফোজার বাবা-মা। তখন তারা বলে যে আমার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে অথচ পুলিশ সুরাত হাল রিপোর্টে সেই তথ্য গোপন করেছে। তাহলে আমার মেয়েকে হত্যার বিচার আমি পাব কি ভাবে। একটি হত্যাকে পুলিশের সহযোগিতায় আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। শামীমের পরিবারের নিকট থেকে কত টাকা নেওয়ার পর পুলিশ এই রিপোর্ট দিয়েছে?
এই প্রসঙ্গে মামলা তদন্ত কারী অফিসার শৈলকূপা থানায় কর্মরত এস আই ইদ্রিসের সাথে মোবাইলে কথা বললে সে জানায় যে আমি সুরাত হাল রিপোর্টে কোন তথ্য গোপন করিনি। আমি যখন রিপোর্ট তৈরি করি তখন মেয়ে পক্ষের সবাই ছিল । ছেলের বাড়ীতে কোন লোক ছিল না । তাছাড়া আমি যদি সুরাত হাল রিপোর্টে কোন তথ্য গোপন করি তাহলে ডাক্তার লাশের পোষ্ট মর্টাম করবে না। সে ক্ষেত্রে কোন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার সুরাত হাল রিপোর্টে তথ্য গোপন করার সুযোগ নেই।
শৈলকূপা থানার তদন্ত কর্মকর্তা মহাসীন জানান, যে সুরাত হাল রিপোর্ট কমপ্লিট না হলে কোন ডাক্তার লাশের পোষ্ট মর্টাম করে না। যদি সুরাত হাল রিপোর্ট কমপ্লিট না হয় তাহলে ডাক্তার কি ভাবে পোষ্ট মর্টাম রিপোর্ট করল?
এই প্রসঙ্গে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে পোষ্ট মর্টাম রিপোর্ট প্রস্তুত কারী ডাঃ মোঃ নাজমুল সাজ্জাদের নিকট আফরোজার ছবি দেখিয়ে জানতে চাওয়া হয় যে সুরাত হাল রিপোর্ট পূর্নাঙ্গ না হওয়ার পরে কি ভাবে আপনি পোষ্ট মর্টাম করলেন। তখন উনি বলেন যে এই ছবি যে ঐ লাশের তা আমি কি ভাবে নিশ্চিত হবো?
আফরোজার পোষ্ট মর্টাম রিপোর্ট হিমাগারে।১৯/০৯/২০২০ তারিখে আফরোজা মারা গেলেও ঘটনার ৩ মাস অতিবাহিত হয়ে গেছে কিন্ত তার পোষ্ট মর্টাম
রিপোর্ট জানতে পারেনি কন্যা হারান পিতা ও তার স্বজনেরা। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে উক্ত ঘটনার পোষ্ট মর্টাম রিপোর্টের খোঁজ করতে গিয়ে জানা যায় যে আফরোজার পোষ্ট মর্টাম রিপোর্ট আজও ঢাকা মহাখালি পাঠান হয়নি । এতদিন অতিবাহিত হওয়ার পর কেন রিপোর্ট ঢাকা মহাখালী পোঁছাল না এ প্রশ্নের উত্তর খুজতে হাসপাতাল ও পুলিশের নিকট থেকে বেরিয়ে এলো ভিন্ন ভিন্ন কথা পুলিশ বলছে এই রিপোর্ট পাঠানোর দায়িত্ব হাসপাতাল কর্তিপক্ষের, আর হাসপাতালের ডাঃ মোঃ নাজমুল সাজ্জাদ বলছে আমরা এখান থেকে সব কিছু প্রস্তুত করে দিয়েছি, কিন্তু কেন সেটা শৈলকূপা থানার পুলিশ মহাখালী পাঠাল না তা আমরা বুঝতে পারছি না। আফরোজা হত্যা -না আত্মহত্যা তার প্রকৃত রহস্য জানা যাবে পোষ্ট মর্টাম রিপোর্ট আসার পর। যদি সুরাত হাল রিপোর্টে প্রকৃত তথ্য গোপন করা হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে প্রকৃত রহস্যের ভেদ জানতে আমাদের অপেক্ষা করতে হবে ঢাকা মহাখালী থেকে পোষ্ট মর্টাম রিপোর্ট অাসা পর্যন্ত।
Address: Unterfeldstraße 25, 44369 Dortmund,Germany
Contact:USA: +1270355-3582 Germany: +4917672714681 BD:+880 1853 521 334, +8801708936801, +8801785844701.
Email: [email protected]